বিশ্বের জনপ্রিয় মোবাইল অপারেটিং সিস্টম হল অ্যান্ড্রয়েড (Android)। বাজারে সবথেকে বেশি অ্যান্ড্রয়েড স্মার্টফোন ইউজার রয়েছে, এবং সেই কারণেই হ্যাকাররা খুব সহজেই এই অপারেটিং সিস্টেম হ্যাক করতে পারে। পাশাপাশিই Android Phone-এর সুবক্ষা নিয়ে পর পর প্রশ্ন উঠছে। আপনিও যদি অ্যান্ড্রয়েড ফোন ব্যবহার করছেন এবং তার সেফটি নিয়ে চিন্তা করছেন তবে আসুন দেখে নেওয়া যাক ফোনকে সুরক্ষিত রাখতে কী কী করবেন?
স্মার্টফোনটি হ্যাকারদের থেকে বাঁচানোর সবথেকে ভাল উপায় হল স্ক্রিন লক করে রাখা। তার জন্য জরুরি ফোনে পাসওয়ার্ড বা পিন দিয়ে রাখা। পিন বা পাসওয়ার্ড দেওয়ার ক্ষেত্রে মাথায় রাখবেন যে হ্যাকার যাতে কোনও মতে অনুমান করতে না পারেন যে, আপনার ফোনের পাসওয়ার্ড কী হতে পারে! পাসওয়ার্ড শক্ত দেওয়া উচিত।
ফোনে পাসওয়ার্ড দিলেই হবে না, বরং ফোনে ইনস্টাল রাখা অ্যাপসগুলিও লক করে রাখতে হবে। বিশেষ করে মোবাইলে থেকে ব্যাংক অ্যাপস, মোবাইল ওয়ালেট এবং অনলাইন শপিং অ্যাপগুলি শক্ত পাসওয়ার্ড দিয়ে রাখুন। বেশ কিছু স্মার্টফোন রয়েছে, যেগুলিতে বিল্ট-ইন অ্যাপ লকিং ফাংশন থাকে।
গুগল (Google), Facebook ও অন্যান্য অ্যাকাউন্ট সুরক্ষিত রাখতে টু ফ্যাক্টর অথেনটিকেশন (Two Factor Authentication) ব্যবহার করুন।
ফোনকে সুরক্ষিত রাখতে নিয়মিত ফোন পরীক্ষা করতে হবে। ফোনে এমন অনেক অ্যাপ ইনস্টল করা থাকে যা খুব কম বা কখনই ব্যবহার করা হয় না। ফোন থেকে এই অ্যাপগুলি ডিলিট করে ফেলুন। এর মধ্যে অনেক অ্যাপ ফোনের ব্যাকগ্রাউন্ডে নিজেই রান হতে থাকে এবং আপনার ব্যক্তিগত তথ্য পাচার করতে থাকে।
আপনার ফোনের সেটিংসে গিয়ে "ইনস্টল আননোন অ্যাপ" অপশন বন্ধ করে দিতে হবে। এই সেটিংসটি করে দিলে ফোনে কোনও APK ফাইল ডাউনলোড করা যাবে না। পাশাপাশিই অ্যাপ ফোনের ব্যাকগ্রাউন্ডে ইনস্টল হতে পারবে না।
ফোনে কোনও অ্যাপ ইনস্টাল করার আগে দেখে নেবেন যে সেটা আসল কি না। অ্যান্ড্রয়েড ফোনে শুধুমাত্র গুগল প্লে স্টোর থেকেই ইনস্টল করবেন। অন্য কোন থার্ড পার্টি স্টোর অথবা ওয়েবসাইট থেকে APK ফাইল ডাউনলোড করে অ্যাপ ইনস্টল করবেন না।
আপনার ফোনে অ্যান্টি ভাইরাস অ্যাপ রাখুন এবং সেই অ্যান্টি ভাইরাস অ্যাপটি ডাউনলোড করার আগে ভালো ভাবে তার রেটিং জেনে নিন। জেনে রাখুন, অ্যান্টিভাইরাস অ্যাপ যেমন আপনার ফোনে ম্যালওয়্যার-ভাইরাসের হানা রুখে দিতে পারে, তেমনই আবার আপনার ফোন থেকে হ্যাকারদেরও কোনও তথ্য চুরি করার সুযোগ দেয় না।
ফোনে থাকা প্রতিটি অ্যাপ কিছু না কিছু তথ্য ব্যবহারের পার্মিশন চায়। ফোনের সেটিংসে গিয়ে অ্যাপগুলিকে দেওয়া পার্মিশন একবার দেখে নিন। কোন অ্যাপ অপ্রয়োজনীয় পার্মিশন চাইলে সেই পার্মিশন বন্ধ করুন। এমন অনেক অ্যাপ থাকে ফোনে যা আপনার ফোনের পার্মিশন নিয়ে আপনার ব্যক্তিগত তথ্য স্টোর করে।
ফোনের ওয়াই ফাই ও ব্লুটুথ প্রয়োজন না হলে বন্ধ করে রাখা উচিত। প্রায় সময় শোনা যায় যে Android Phone ইউজারের তথ্য ওয়াই ফাই ও ব্লুটুথ এর মাধ্যমে চুরি করা হয়েছে।
অ্যান্ড্রয়েড ফোনকে সুরক্ষিত রাখতে কিছু জিনিস মাথায় রাখা প্রয়োজন। এর মধ্যে একটি হল পাবলিক Wi-Fi এড়িয়ে চলা। যতটা পারবেন পাবলিক ওয়াই-ফাই এড়িয়ে চলা উচিত। কারণ পাবলিক Wi-Fi সুরক্ষিত কী না,সেটা Wi-Fi প্রোভাইডারও বলতে পারবে না। এছাড়া নিশ্চিত করবেন যে আপনার ফোন কোনও Wi-Fi-এর সঙ্গে যেন অটোমেটিক্যালি কানেক্টেড না হয়ে যায়।
ফোন চুরি হওয়ার হাত থেকে বাঁচাতে ফাইন্ড মাই ডিভাইস ব্যবহার করা উচিত। ফোন হারিয়ে গেলে খুব সহজেই খুঁজে পাওয়া যাবে।
ভুলেও আপনার স্মার্টফোন কখনও রুটিং করবেন না। অ্যান্ড্রয়েড ফোনে রুটিং করার অর্থই হচ্ছে অপারেটিং সিস্টেম আনলক করা, যাতে আপনি আনঅ্যাপ্রুভড অ্যাপস ইনস্টল করতে পারেন, অযাচিত ব্লোডওয়্যার ডিলিট করা, OS আপডেট করা, যা ইচ্ছে তাই কাস্টোমাইজ করা। এসব করে নিজের অজান্তেই হ্যাকারদের সুযোগ করে দিচ্ছেন।