মানুষের প্রস্রাব নাকি উপকারী, এটাকে খাওয়া উচিত কি না সেটা নিয়েও চলেছে একাধিক গবেষণা, তর্ক। কিন্তু তাই বলে প্রস্রাবের এত শক্তি আছে সে কথা কি কেউ জানত? অবশ্য ইংল্যান্ডের এক বিজ্ঞানী লোনিস লেরোপৌলশ বলেছিলেন যে মানুষের প্রস্রাবের বৈদ্যুতিক ক্ষমতা আছে। শুধু তাই নয় তিনি গবেষণা করে দেখাতে চেয়েছিলেন যে মানুষের প্রস্রাব দিয়ে মোবাইল ফোন চার্জ করা যায়। যদিও সেই গবেষণা বিশেষ সফলতা পায়নি, তবে এই খবর সারা পৃথিবীতে ছড়িয়ে পড়ে। আজ থেকে নয় বছর আগে লোনিস এই গবেষণা করেছিলেন। তারপর থেকে প্রস্রাবের যে এই ক্ষমতা আছে সেটা জানা সত্ত্বেও সেটাকে কাজে ব্যবহার করা যায়নি।
কোথায় করা হয়েছিল এই গবেষণা জানেন? ইংল্যান্ডের ব্রিস্টল রোবোটিক্স ল্যাবরেটরিতে। সেখানেই পরীক্ষা করে দেখা যায় যে মানুষের প্রস্রাব দিয়ে মোবাইল ফোন চার্জ করা যায়। লোনিস ছিলেন ইউনিভার্সিটি অফ ওয়েস্ট অফ ইনল্যান্ডের অধ্যাপক। তিনি এটা আবিষ্কার করে বলেছিলেন পৃথিবীতে এটা প্রথমবার কেউ আবিষ্কার করল, এর আগে কেউ প্রস্রাবের এই ক্ষমতার কথা বুঝতে পারেনি। শুধু তাই নয়, এই বিষয়ে তিনি এটাও বলেছিলেন এটা বিদ্যুতের এমন একটা উৎস যা কোনদিন শেষ হবে না। কেন? কারণ একজন ব্যক্তি তাঁর নিজের প্রস্রাব দিয়েই মোবাইল ফোন চার্জ করতে পারবেন। অন্য কিছুর সাহায্য লাগবে না আর তার। গোটা বিষয়টি যে বেশ অভিনব সে কথা এই বিজ্ঞানী স্বীকার করে নিয়েছিলেন।
তবে আপনি যদি ভেবে থাকেন যে প্রস্রাব দিয়ে আপনার ফোন ফুল চার্জ করা যাবে এমনটা কিন্তু মোটেই নয়। তবে হ্যাঁ লোনিসের কথা অনুযায়ী মেসেজ পাঠানো বা অল্প বিস্তর নেট ব্যবহার করার জন্য যতটা চার্জ প্রয়োজন সেটুকু চার্জ হয়ে যাবে। অনেক সময় রাস্তাঘাটে ফোনের চার্জ শেষ হয়ে যায়, তখন মানুষকে বিপদে পড়তে হয়, জরুরি কল করা যায় না। আর ফোনের ব্যাটারি মূলত ফোন করার জন্যই শেষ হয়। তখন এই পদ্ধতিকে কাজে লাগানো যেতে পারে। শুধু তাই নয়, তিনি এই গবেষণার সঙ্গে আরও একটি বিষয়ে জানিয়েছিলেন।
তিনি বলেছিলেন মাইক্রোবায়াল ফুয়েল সেল তৈরি করা গেলে ফুল চার্জ করা যাবে। এটা কী করে সম্ভব। এই পদ্ধতিতে আমাদের প্রস্রাবে যে ব্যাকটেরিয়া আছে সেটা ভেঙে যাবে এবং সেখান থেকে বিদ্যুৎ তৈরি হবে। সেটা দিয়েই চার্জ করা যাবে ফোন। রয়াল সোসাইটি অফ কেমিস্ট্রি জার্নাল অফ ফিজিক্যাল কেমিস্ট্রিতে এই গবেষণার কথা প্রকাশিত হয়েছিল।
পরে এই গবেষণার কাজ বেশ অনেকটাই এগিয়ে যায়। 2016 সালে ইংল্যান্ডের এই ল্যাবরেটরির তরফে জানানো হয় যে এক ব্যক্তির 600 মিলিলিটার থেকে 6 ঘণ্টা চার্জ দেওয়ার মতো বিদ্যুৎ উৎপন্ন করা সম্ভব। জানা গিয়েছে এখনও এই বিষয়ে গবেষণা চলেছে। একবার এটা সফলতা পেলে গোটা বিশ্বের মানুষ বিনা খরচায় স্মার্টফোন চার্জ দিতে পারবেন। ইউনিভার্সিটি অফ ওয়েস্ট ইংল্যান্ডের তরফে জানানো হয়েছে তারা এখনও এই বিষয় নিয়ে গবেষণা করছে। ফলে আগামীতে বাথরুমে গিয়ে ফোন ঘাঁটার বদলে চার্জও দেওয়া যাবে! বিষয়টা মন্দ নয় কী বলেন?