মানুষ সারাক্ষণ মোবাইলে ডুবে, নিজের সৃষ্টির পরিণাম দেখে ক্ষোভ প্রকাশ আবিষ্কর্তার

Updated on 31-Mar-2023
HIGHLIGHTS

আজকাল স্মার্টফোন আমাদের জীবনের গুরুত্বপূর্ণ অংশ হওয়ার পাশাপাশি নেশাও হয়ে উঠেছে

এবার মোবাইলের এই নেশা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করলেন মার্টিন কুপার

বললেন তিনি ভাবেননি কখনও যে এমনটা হবে

মোবাইল ফোন এখন আমাদের জীবনের একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অংশ। এই ছোট্ট যন্ত্রটি ছাড়া আমাদের জীবন অচল। সামান্য কথা বলা হোক বা সোশ্যাল মিডিয়ায় সময় কাটানো বা OTT প্ল্যাটফর্মে পছন্দের কনটেন্ট দেখা সবের জন্য প্রয়োজন এতিম ফলত মানুষের মধ্যে দিন দিন মোবাইলের প্রতি আকর্ষণ বাড়ছে। এবার এই গোটা বিষয় নিয়ে মুখ খুললেন খোদ মোবাইল ফোনের প্রস্তুতকারক। মোবাইল ফোনের সৃষ্টিকর্তা মার্টিন কুপার এই বিষয়ে বলেন, 'মানুষ সারাক্ষণ ফোনের দিকে তাকিয়ে আছে। এমনটা হবে ভাবিনি।'

আজ থেকে 50 বছর আগে মার্টিন কুপার মোবাইল ফোন আবিষ্কার করেন। এই আমেরিকান ইঞ্জিনিয়ার এখন মানুষের এই মোবাইল ফোনের উপর আসক্তি দেখে ভীষণই ক্ষুব্ধ। তাঁর মতে এই ছোট যন্ত্রের সাহায্যে অনেক কাজ হয় ঠিকই কিন্তু মানুষ তার প্রতি দিন দিন মোহগ্রস্ত হয়ে পড়ছে। 

মার্টিন কুপার সম্প্রতি তাঁর দেওয়া একটি সাক্ষাৎকারে এই বিষয়ে বলেন 'যখন দেখি কেউ ফোন দেখতে দেখতে রাস্তা পার হচ্ছে খুব খারাপ লাগে। যতক্ষণ না কিছু মানুষ মারা যাচ্ছে ততক্ষণ কারও বোধ ফিরবে না।' কিন্তু এই ৯৪ বছর বয়সী কুপার ক্যালিফোর্নিয়ায় নিজের দফতরে বসে যে কথা বললেন সেটা কি ঘটেনি? মানুষ কি মোবাইল ফোনে ডুবে থাকার কারণে প্রাণ হারাননি? হারিয়েছেন তো। কিন্তু হুঁশ? ফেরেনি। উল্টে সোশ্যাল মিডিয়া, ফোনের নেশায় মানুষ আরও দুবে গিয়েছে।

মার্টিন কুপার নিজে জানিয়েছেন তাঁর নাতি নাতনিরা যেভাবে মোবাইল ফোন ব্যবহার করেন তিনি কখনই সেভাবে মোবাইল ফোন ব্যবহার করতে পারবেন না। তিনি মনে এই যন্ত্র মূলত কথা বলার জন্য ব্যবহার করলেও তিনি কিন্তু বাজারে নতুন ফোন এলেই সেটা তৎক্ষণাৎ কিনে ফেলেন। পুরনো ফোন বদলান ঘনঘন। ব্যবহার করে অ্যাপেল ওয়াচ তাও লেটেস্ট ভার্সনটি। কিন্তু মানুষ যেভাবে ফোনে ডুবে থাকছে আজকাল সেই প্রসঙ্গে যতই তিনি বিরক্ত হন না কেন একই সঙ্গে জানান, এক সময় সেটা আর থাকবে নাম আজ মানুষ মোবাইলে জাদুতে মজলেও, সেটা দ্রুত কেটে যাবে। 

মার্টিন কুপার 1973 সালের 3 এপ্রিল প্রথমবার একটি মোবাইল প্রস্তুতকারক সংস্থার হয়ে বিশ্বের প্রথম মোবাইল তৈরি করেন। তবে সেটা কিন্তু আজকালকার ফোনের মতো স্লিক ডিজাইন, ফ্যাশনেবল বস্তু ছিল না। বরং একটি ভারী, জটিল, তারে প্যাঁচানো যন্ত্র ছিল। মোবাইল ফোন নিয়ে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে পর থেকেই ভাবনা শুরু হয়। এরপর এক একটি কোম্পানি আরেকটিকে টক্কর দিয়ে আগে মোবাইল ফোন আনার প্রস্তুতি নেমে পড়ে। কিন্তু শেষ হাসি হাসে মার্টিন কুপারের কোম্পানি। 

1960সে গাড়িতে রাখা যায় এমন এক ফোন আনা হলেও তাতে খুশি বা নিশ্চিন্ত কোনটাই হতে পারেননি মার্টিন। ফলে এর কিছু বছর পর 1972 সালে তিনি ঠিক করেন এমন কিছু আনবেন যা একজন মানুষ সবসময় তার সঙ্গে রাখতে পারে। যে কোনও জায়গা থেকে সেটাকে ব্যবহার করতে পারে। এরপর তিনি এবং তাঁর দল এক টানা তিন মাস গবেষণা করে। এবং শেষ পর্যন্ত পরের মাসের মার্চে গিয়ে সফলতা পান। প্রথম যে ফোন তৈরি হয়েছিল সেটার সাহায্যে এক টানা 25 মিনিট পর্যন্ত কথা বলা যেতে পারত। এটির ওজন ছিল 1 কেজির বেশি। কিন্তু এই ফোন তৈরি করে কাকে প্রথম ফোন কল করেছিলেন কুপার? তাঁদের প্রতিযোগী কোম্পানিকে। কী বলেছিলেন জানেন? এই মার্কিন ইঞ্জিনিয়ার তাঁর বানানো যন্ত্র দিয়ে বলেছিলেন যে তিনি একটি হাতে ধরা সেলফোন দিয়ে কথা বলছেন। এটি একজন এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায় বয়ে নিয়ে যেতে পারেন। এটা হাতে ধরা যায়।

Subhasmita Kanji

I am Subhasmita Kanji from Kolkata. I have completed my Masters in Geography from University of Calcutta. In Media sector I have worked for several eminent houses like 4th Pillars, Bangla Jago Tv, Hindustan Times Bangla, and Digit Bangla.

Connect On :