স্মার্টফোন মানুষের জীবনকে অনেক সময় করেছে। ঘড়ি থেকে রেডিও, ক্যালকুলেটর থেকে ক্যালেন্ডার, ইত্যাদিকে এক ছাদের তলায় এনে দিয়েছে। শুধুই কি তাই? জরুরি মেসেজ পাঠানো হোক বা ডকুমেন্ট, চটজলদি যোগাযোগের ক্ষেত্রেও স্মার্টফোনের জুড়ি মেলা ভার! ফলে বর্তমান সময় দাঁড়িয়ে স্মার্টফোন ছাড়া জীবন ভাবা? অকল্পনীয় বিষয় একটা! দৈনন্দিন কাজ থেকে পরিবার/ বন্ধুর সঙ্গে যোগাযোগ, খাবার থেকে জামা কাপড়, সবজি থেকে অন্য কিছু কেনা সবই এখন মুঠোফোন দিয়েই হয়ে যায়। বাদ যায় না অর্থনৈতিক লেনদেনও। ফলে বুঝতেই পারছেন আমাদের জীবনে এই ছোট্ট যন্ত্রটির গুরুত্ব ঠিক কতখানি!
তবে এই জরুরি যন্ত্রটির আয়ু কিন্তু খুব বেশি নয়। বড়জোর 3 থেকে 4 বছর! তারপরই নতুন যন্ত্র কিনতেই লাগে। খুব সহজ ভাষায় বলতে গেলে ইউজ অ্যান্ড থ্রো! বছর তিন চার ব্যবহার করো এবং ফেলে দাও। কারণ এরপরই তো ফোনে নানা সমস্যা দেখা দেয়। কখনও মেমোরির সমস্যা তো কখনও ফোন হ্যাং করে যাওয়া, এরম একাধিক সমস্যা দেখা যায়। ফলে দৈনন্দিন কাজে ব্যাঘাত ঘটে! এমন সময় নতুন ফোন না কিনলেই নয়।
কিন্তু যদি নতুন ফোনেও এই এক হ্যাং করার সমস্যা দেখা যায়? কিংবা আপনি যদি আপনার পুরনো ফোনটার আয়ু আরও একটু বাড়িয়ে নিতে চান? এক্ষেত্রে কী করণীয় জানেন কি? তেমন কিছুই না, কেবল কয়েকটি সহজ ধাপ মেনে চললেই ফোনের হ্যাং করার মতো সমস্যা থেকে অন্তত মুক্তি পেয়ে যাবেন সে নতুন ফোন হোক বা পুরনো। দেখুন সেই পদ্ধতিগুলো।
সবার আগে ফোনে যত অদরকারি, অপ্রয়োজনীয় অ্যাপ আছে সরিয়ে ফেলুন। আমার আপনার ফোন এমন একাধিক অ্যাপ থাকে যা কস্মিনকালেও কাজে লাগে না। তবুও থাকে। সেগুলো সবার আগে হটিয়ে দিন। এবার দেখুন তাও এমন কিছু অ্যাপ থেকে যাবে যেগুলো ব্যবহারও করা হয় না আবার সরানো যায় না। এক্ষেত্রে আনইনস্টল না করা গেলেও ডিজেবল করা যায়। ফলে সেটাই করে দিন। কী হবে এতে? কিছুই নয়। আপনার ফোনের স্পেস বাঁচবে একটু। ফলে আপনি ফোন স্লো হয়ে যাওয়ার যে সমস্যায় ভুগছিলেন সেটা কমে যাবে। কোনও অ্যাপ ডিজেবল করতে চাইলে সেটিকে বেশ কিছুক্ষণ ক্লিক করে থাকুন। এবার ইনফো বলে একটা পপ আপ আসবে সেটাকে ক্লিক করলেই Disable অপশন দেখতে পাবেন। তবে মনে রাখবেন এক্ষেত্রে ফোন আপনাকে অনেক সতর্কবার্তা দেবেন। কিন্তু সেসব গ্রাহ্য না করেই সেটাকে স্রেফ অফ করে দিন।
অনেক সময়ই দেখা যায় বেশ কিছু স্মার্টফোনে থেকে থেকে লকস্ক্রিনের ওয়ালপেপার বদলে যায়। সঙ্গে দেখা যায় নানা বিজ্ঞাপন। আজকাল একাধিক স্মার্টফোনেই এই গ্ল্যানস স্ক্রিন দেখা যায়। ফলে এটা কিন্তু ফোনের ব্যাকগ্রাউন্ডে সমানেই চলতে থাকে। এতে আপনার ফোনের ব্যাটারি এবং ডেটা দুই অপচয় হুম ফলে সেটিংসে গিয়ে এটিকে অফ করে দিন। সেটিংসে যান। সেখানে গিয়ে Glance লিখে সার্চ করুন। এরপর ডিজেবল অপশন ক্লিক করে অফ করে দিন। দেখবেন যেই এটাকে অফ করছেন আপনার ফোনের ব্যাটারি এবং ডেটা তো বাঁচছেই, উল্টে ফোনের গতিও বেড়ে গিয়েছে।
Facebook, Instagram, ইত্যাদি অ্যাপগুলো কিন্তু ফোনের অনেকটা মেমোরি দখল করে রাখে। ফলে যে ফোনে স্টোরেজ কম সেখানে কিন্তু সমস্যা তৈরি হয় অল্প দিনেই। তাই চেষ্টা করুন এই অ্যাপগুলোর যে লাইট ভার্সন আছে সেগুলো ব্যবহার করার। এই অ্যাপগুলোর সাইজ ছোট হয়। ফলে ফোনের জায়গা বাঁচবে।
আপনার ফোনের যে ডেভেলপার বলে অপশন আছে সেখানে আপনি একটি ব্যাকগ্রাউন্ড প্রসেস লিমিট বলে অপশন পাবেন। এখানে আপনি একাধিক নতুন মোড পেয়ে যাবেন। এখান থেকে একটি করে মোড বাছুন আর দেখুন কোনটিতে আপনার ফোন সেরা পারফরমেন্স দিচ্ছে।
আপনার ফোনের যে Builder অপশন আছে সেখানে যান। এটি আপনার ফোনের About অপশনে পাবেন। সেখানে গিয়ে যদি আপনি পরপর সাতবার ক্লিক করেন আপনি তাহলে ডেভেলপার মোডে পৌঁছে যেতে পারবেন। এবার সেখানে গিয়ে উইন্ডো অ্যানিমেশন অপশনে ক্লিক করুন। তারপর সব কটি অ্যানিমেশনের গতি কমান। 0.5X করে দিন। এই অ্যানিমেশনের জন্য ফোনের স্পিড অনেক সময় বেশ খানিকটা কমে যায়। তাই আপনি যদি অ্যানিমেশন স্পিড কমিয়ে দেন তাহলে আপনার ফোনের গতি বেড়ে যাবে।