জাপান বড়সড় বিপ্লব ঘটাতে চলেছে। কীসে? মহাকাশ ভ্রমণে। জাপানে তৈরি হতে চলেছে স্পেস কলোনি। নেপথ্যে রয়েছে কিওটো বিশ্ববিদ্যালয়, এবং কাজিমা কনস্ট্রাকশন। এই দুটো ইনস্টিটিউশন একত্রে জোট বেঁধে আর্টিফিসিয়াল স্পেস কলোনি তৈরি করবে। আর এই কলোনির সাহায্যে তারা মানুষকে পৌঁছে দেবেন চাঁদ এবং মঙ্গলে (Moon and Mars)। কিন্তু ভাবছেন যাবেন কীসে? কেন আছে তো বুলেট ট্রেন (Bullet train)। বুলেট ট্রেনে চাপলেই এই আর্টিফিসিয়াল স্পেস কলোনি (Artificial Space Colony) আপনাকে চাঁদে এবং মঙ্গলে পৌঁছে দেবে, Hexatrack নাম হবে এই নতুন ইন্টারপ্ল্যানেটরি ট্রান্সপোর্ট সিস্টেমের (Interplanetory Transport System)।
আন্তঃগ্রহীয় এই ট্রান্সপোর্ট সিস্টেম বা যাতায়াত ব্যবস্থা তৈরি করতে লেগে যেতে পারে একশো বছরেরও বেশি সময়। হ্যাঁ, এক শতাব্দী! মহাকাশ সম্পর্কিত যে চাপা প্রতিযোগিতা ছিল সেটা জাপানের তরফে এই খবর প্রকাশ্যে আসার পর কয়েকগুণ বেড়ে গিয়েছে। তবে জাপান তো ছাড়ার পাত্র নয়। তাই সে তার প্রতিদ্বন্দ্বীদের থেকে বেশ কয়েক কদম এগিয়ে থাকতে ট্রেন তৈরি করার পরিকল্পনা করেছে। যেখানে এখনও অবধি ভারত সহ একাধিক দেশ যেমন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, চিন, ইউরোপ তারাদের দেশে মানুষের পদচিহ্ন ছড়িয়ে দিতে অবিরাম চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে, সেখানে জাপান অনেকদূর এগিয়ে এমন ভাবনাই ভেবেছে। যদি এমনটা সত্যি হয় তাহলে বেশ কিছু প্রশ্ন উঠে আসছে। জেনে নেওয়া যাক সেগুলো।
যে গ্লাসে করে শ্যাম্পেন খাওয়া হয় তেমন এক এঁদো ধাঁচ বা স্ট্রাকচার তৈরি করা হবে। এই স্ট্রাকচারের নাম দেওয়া হবে দ্যা গ্লাস। এই গ্লাসগুলোর মধ্যেই থাকবেই জল, সবুজ এলাকা এবং অন্যান্য পরিবহন ব্যবস্থা। এমনটাই জানিয়েছেন এই প্রজেক্টের গবেষকরা। শোনা যাচ্ছে এই ধাঁচ বা স্ট্রাকচারটি পৃথিবীর মতোই আর্টিফিসিয়াল মাধ্যাকর্ষণ তৈরি করা হবে এবং এই মাধ্যাকর্ষণ তৈরি হবে চাঁদ এবং মঙ্গলের ঘূর্ণনের ফলে যে কেন্দ্রাতিগ শক্তি উৎপন্ন হবে তার সাহায্যেই। শোনা যাচ্ছে এই শতাব্দীর মাঝামাঝির মধ্যেই গোটা বিষয়টির একটা প্রোটোটাইপ তৈরি করে ফেলা হবে।
অনেকটা পথ অতিক্রম করার জন্য Hexatrack এ বজায় থাকবে 1G মাধ্যাকর্ষণ। এর ফলে কম মাধ্যাকর্ষণেও দীর্ঘায়িত এক্সপোজারের যে প্রভাব সেটা হ্রাস পাবে। যে বুলেট ট্রেনগুলো চলবে তাতে থাকবে হেক্সাগান শেপের ক্যাপসুল। এই ক্যাপসুলগুলোকে বলা হবে hexacapsule। এই ক্যাপসুলগুলোর ঠিক মাঝে থাকবে একটি চলমান ডিভাইস। এর ফলে পৃথিবী এবং চাঁদ 15 মিটারের ব্যাসার্ধের একটা মিনি ক্যাপসুল দিয়ে যুক্ত হবে। পাশাপাশি চাঁদ এবং মঙ্গল পাবে একটি 30 মিটার ব্যাসার্ধের ক্যাপসুল।
সাধারণ গজ ট্র্যাকেই (Gauge Track) স্পেস ট্রেন চলবে এবং এর মাধ্যমেই চাঁদ এবং মঙ্গলের যে বেস সে দুটোকে যুক্ত করা হবে। এছাড়াও পৃথিবীর মাধ্যাকর্ষণ টান এড়াতে ট্রেনগুলোর সামনের এবং দেশের বগিতে দেওয়া হবে রকেট বুস্টার। এটি মহাকাশে ট্রেনের গতি বাড়াতে বা কমাতে সাহায্য করবে। পাশাপাশি বুলেট ট্রেনগুলোতে থাকবে ডানা, যা খোলা যাবে আবার বন্ধ করা যাবে।
মহাকাশে যে বুলেট ট্রেনগুলো চলবে তাদের নাম দেওয়া হয়েছে স্পেস এক্সপ্রেস। এই ট্রেনে থাকবে মোট 6টা বগি। যে ট্রেনগুলো পৃথিবীর দিকে আসবে সেই ট্রেনের স্টেশনের নাম দেওয়া হবে টেরা স্টেশন। চাঁদের স্টেশনকে বলা হবে লুনার স্টেশন (Lunar Station) এবং মঙ্গল গ্রহের স্টেশনের নাম হবে মঙ্গল স্টেশন (Mars Station)। এই স্টেশনটি মঙ্গলের উপগ্রহ ফোবসে তৈরি হবে বলে জানা গিয়েছে।