Nasa এর চমক দেওয়ার যেন শেষ নেই। একের পর এক দারুন সব নজির তৈরি করছে এই প্রতিষ্ঠান। আজ থেকে 53 বছর আগে চাঁদের মাটিতে পা রেখেছিল মানুষ। কিছুদিন আগে নাসা সেই চাঁদের পৃষ্ঠের ছবি তুলে সকলকে দেখিয়েছে। জুম করে সেই ছবিটি তোলা হয়েছিল। আর সেই ছবিতেই ধরা পড়েছিল মানুষের স্পষ্ট পায়ের চাপ। এবার আর চাঁদ নয়। সোজাসুজি মহাকাশের দিকে টেলিস্কোপ তাক করে জুম করে একটি ভিডিও বানিয়ে প্রকাশ করেছে কানাডার এই স্পেস গবেষণা কেন্দ্র। আর এই ভিডিওতে ধরা পড়েছে একটি অনন্য দৃশ্য। সেই ভিডিওয় দেখা গিয়েছে একটি তারার মৃত্যু। জেমস ওয়েব টেলিস্কোপ, পৃথিবীর সব থেকে শক্তিশালী এবং বৃহত্তম টেলিস্কোপ এই ভিডিওটি তুলেছে।
জেমস ওয়েব টেলিস্কোপ (James Webb Telescope) জুম করেছিল এই তারার মৃত্যুকে দেখার জন্য আর তখনকার সেই ছবি উঠে আসে ভিডিওতে। সাদার্ন রিং নেবুলায় (Southern Ring Nebula) অবস্থিত নীহারিকা NGC3132 দুর্দান্ত একটি ছবি ধরা পড়েছে এই ভিডিওতে। টুইটের মাধ্যমে নাসা জানিয়েছে কী করে এই টেলিস্কোপ এত দূরের বস্তুকে ফোকাস করেছিল। নাসার পাশাপাশি কানাডার স্পেস এজেন্সিও (Canada Space Agency) এই বিষয়টির সঙ্গে যুক্ত। যে ভিডিওটি প্রকাশ্যে এসেছে তাতে যে সাদার্ন রিং নেবুলা দেখা গিয়েছে তা 200 আলোকবর্ষ দূরে অবস্থিত, সেটা জুম করে দেখানো হয়েছে। ফাইন গাইডেন্স সেন্সর যা কানাডাতে তৈরি হয়েছে সেটি এই টেলিস্কোপে ব্যবহৃত হয়েছে। আর সেটার সাহায্যেই এই টেলিস্কোপ তার নির্দিষ্ট লক্ষ্যের ছবি তুলতে সক্ষম হয়েছে।
গত সপ্তাহে যখন এক টেলিস্কোপের তোলা অন্যান্য ছবি প্রকাশিত হয়েছিল তখন একই সময়ে সাদার্ন রিং নেবুলার ছবিও সমানে এসেছিল। এই ছবিগুলো যখন প্রকাশিত হয় তখন তা নিমেষেই সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়। এখানে দেখা গিয়েছে কোন তারার মৃত্যু কী ভাবে হয়েছে। 5.8 ট্রিলিয়ন মাইল দূরে অবস্থিত মহাজাগতিক ঘটনার ছবি তুলেছে টেলিস্কোপটি। এই প্রজেক্টের সঙ্গে যুক্ত বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন একটি তারার মৃত্যু হয় যখন তখন জন্ম নেয় আরেকটি তারা।
জেমস ওয়েব টেলিস্কোপ তার নিয়ার ইনফ্রারেড ক্যামেরার (NIR Cam) সাহায্যে এই ছবিগুলো তুলেছে। রাতের আকাশে আমরা তারা হিসেবে যেটা দেখতে পাই তা আসলে নক্ষত্রের জ্বলন, জ্বালানি থাকার কারণে নক্ষত্রগুলো জ্বলে। জ্বালানি শেষ হয়ে গেলে নক্ষত্রের মৃত্যু হয় জন্মের কয়েক কোটি বছর পর। তখন এই প্রক্রিয়ার কারণে জন্ম নেয় নেবুলা। আর তখনই দেখা যায় ধুলো এবং রঙিন মেঘের বিস্ফোরণ। জেমস ওয়েব টেলিস্কোপের আগে কোনও টেলিস্কোপ এত নিখুঁত ছবি তুলতে সক্ষম হয়নি।
জেমস ওয়েব টেলিস্কোপটিকে 2021 সালে নাসা এবং কানাডা স্পেস এজেন্সি একত্রে মহাকাশে পাঠিয়েছিল। আর কিছুদিন আগেই এই টেলিস্কোপের সাহায্যে তোলা একাধিক ছবি সামনে এসেছে। এই টেলিস্কোপের হাত ধরে মহাকাশ গবেষণার এক নতুন দিক খুলে গেল বলে মনে করছেন মহাকাশ বিজ্ঞানীরা।