Open AI, যা কিনা একটি রিসার্চ ফার্ম সেটা একটি AI ক্ষমতাসম্পন্ন চ্যাটবট তৈরি করেছে নাম ChatGPT। আর এই চ্যাটবটটি তার ক্ষমতা দিয়ে ব্যবহারকারীদের মুগ্ধ করেই চলেছে। বর্তমানে এই প্ল্যাটফর্মটি বিনামূল্যে যে কেউ যে কোনও ধরনের কাজের জন্য ব্যবহার করতে পারেন, এর মধ্যে আছে কথা বলা, কোনও অঙ্ক সমাধান করা, লম্বা অনুচ্ছেদ লেখা, ব্র্যান্ডের জন্য ক্যাম্পেইন করা ইত্যাদি। শুধু তাই নুজ এটি আপনার কম্পিউটারের কোড পড়তে এবং রিভিউ করতে পারে। আর সেই কারণেই এখন বেশ কিছু প্রতারক এই ChatGPT ব্যবহার করে বিভিন্ন ম্যালিসিয়াস কোড তৈরি করে ম্যালওয়্যার তৈরি বানাচ্ছে। তা সত্বেও, এই চ্যাটবট এতটাই ভার্সেটাইল, এতটাই নিখুঁত যে ব্যবহারকারীদের মধ্যে এটা দারুন জনপ্রিয়।
চেক পয়েন্ট রিসার্চ, যা কিনা একটি সিকিউরিটি ফার্ম সেটির মতে একাধিক গোপন কমিউনিটির তরফে জানা গিয়েছে যে প্রতারকরা খোলাখুলি ভাবে Open AI এর টুল ব্যবহার করে বিভিন্ন ক্ষতিকর অ্যাপ বানাচ্ছে। একটি ব্লগ পোস্টে গবেষকরা জানিয়েছেন যে বারবার ম্যালিশিয়াস টুল ব্যবহার করাটা একটা বেসিক জিনিস। এবং তেমন ভয়ের কিছু নয়। যদিও এটা কেবল সময়ের ব্যাপার। এখনও পর্যন্ত কেউ এটাকে ক্ষতিকর কিছুর জন্য ব্যবহার করেনি ঠিকই কিন্তু ভবিষ্যতেও যে করবে না সেটা কে বলতে পারে? হয়তো আগামীতে এই লুপহোলকে কাজে লাগিয়ে আরও বড় কোনও বিপদের ছক কষতেই পারে প্রতারকরা।
শুধু তাই নয়, গবেষকরা একটি চ্যাট থ্রেড দেখতে পেয়েছেন, সেটার নাম ChatGPT Benefits of Malware। আর এটি একটি বিখ্যাত হ্যাকিং ফোরামে দেখা গিয়েছে। আর সেখানেই এক পাবলিশার তাঁর ChatGPT -এর ব্যবহারের অভিজ্ঞতা শেয়ার করেছেন। তিনি জানান যে তিনি এই প্ল্যাটফর্মের সাহায্যে পাইথন ভিত্তিক একটি ইনফরমেশন চুরি করার অস্ত্র বানিয়েছেন। এটার সাহায্যে কমন ফাইল টাইপ সার্চ করা যাবে। শুধু তাই নয় কপিও করা যাবে। এবং সেগুলোকে একটি টেম্প ফোল্ডারে রেখে জিপ ফাইল বানিয়ে যে কোনও হার্ড কোডেড এফটিপি সার্ভারে আপলোড করা যাবে।
আরেকটা উদাহরণ হিসেবে আরেক প্রতারকের কথা বলা হয়েছে। তিনি এই ChatGPT ব্যবহার করে সিম্পল Java ভিত্তিক একটি ম্যালওয়্যার বানিয়েছেন বলে জানা গিয়েছে। এই পোস্টে লেখা হয়েছে, 'এই জাভা স্ক্রিপ্ট মডিফাই করা যাবে এবং সেটার সাহায্যে যে কোনও প্রোগ্রাম ডাউনলোড করে চালানো যাবে। এমনকি সাধারণ ম্যালওয়্যার ফ্যামিলিগুলোও।'
একই রকম ভাবে এই গবেষক সংস্থা দেখেছে যে কীভাবে হ্যাকাররা ChatGPT ব্যবহার করে ম্যালিসিয়াস এনক্রিপশন টুল তৈরি করছে। এবং প্রতারণা জাল তৈরি করার জন্য ডার্ক ওয়েব মার্কেটপ্লেস তৈরি করছে।
তবে এখন পর্যন্ত বোঝা যাচ্ছে যে এই ChatGPT -এর যে ক্ষমতা আছে সেটা ডার্ক ওয়েবের সদস্যদের ভীষণ পছন্দের হবে কিনা। এবং আগামী দিনে এটা ত্রাস হয়ে উঠবে কিনা। তবে এটা নিশ্চিত যে এটা ধীরে ধীরে নতুন, পুরনো দুই ধরনের প্রতারকদের মধ্যে জনপ্রিয়তা অর্জন করছে।
এটার কথার পরিপ্রেক্ষিতে বলা যেতে পারে ভারতে এমন একদল মানুষ আছেন যাঁরা WhatsApp -এর মাধ্যমে মানুষের থেকে টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন। কিন্তু এতদিন পর্যন্ত অধিকাংশ ক্ষেত্রেই দেখা গিয়েছে যে এই ক্ষতিকর যে ক্যাম্পেইনগুলো চালানো হয় সেগুলি সবই ভুল ইংরেজিতে ভরা। কিন্তু এখন এটা শুধরে নেওয়া যাবে। ChatGPT সেই সুযোগ করে দেবে প্রতারকদের। ফলে বুঝতে পারছেন এখন এটার সাহায্যে প্রতারণা চক্র আরও কতটা নিখুঁত, পরিপাটি হবে। আপনি চাইলেও ধরতে পারবেন না। এছাড়া তারা একাধিক ছবি তৈরি করে পারে AI- এর সাহায্যে তাও কোনও কপিরাইট ক্লেইম না খেয়েও।
তবে বর্তমানে ChatGPT নানা আপগ্রেড পাচ্ছে। যাঁরা এটির ডেভেলপার তাঁরা হয়তো এই সমস্যার দিকটা ভেবে দেখবেন এবং দ্রুত ম্যালিসিয়াস কোড লেখা এবং রিভিউয়ের ব্যাপারটা শুধরে নেবে। শুধু তাই নয় তারা এখন ইনভিজিবল ওয়াটারমার্ক নিয়ে কাজ করছে যা AI উৎপন্ন মেসেজে আলাদা করে দেবে।