Twitter Deal: টুইটার কিনবেন না এলন মাস্ক! মেলেনি ফেক অ্যাকাউন্টের তথ্য, তবে কি এবার আইনি জটিলতা শুরু?
টুইটার কিনছেন না এলন মাস্ক কারণ ফেক অ্যাকাউন্ট এর তথ্য নেই
কদিন ধরেই এই আভাস পাওয়া যাচ্ছিল যে তিনি এই চুক্তি বিমুখ হতে চলেছেন
এখন কি তবে নতুন সমস্যা শুরু হতে যাচ্ছে?
এক প্রকার ঢাক ঢোল পিটিয়ে এলন মাস্ক (Elon Musk) জানিয়েছিলেন যে তিনি টুইটার (Twitter) কিনতে চলেছেন। কিন্তু এখন আর সেটা বাস্তব হচ্ছে না। এই গোটা বিষয়ের মাঝে সত্যি একটা খেলা হল বটে! এটা মানতেই হবে। চারদিকে কত আলোচনা, কত খবর, কত মিম। কিন্তু সেসব যে শুধুই কথার কথা বাস্তব নয় সেটাও তিনি এবার বুঝিয়ে দিলেন। আসলে সবসময় ধন থাকলেও মান থাকবে এমনটা নয়, এক্ষেত্রে তিনি যেন নিজেই নিজের মান খোয়ালেন। কিন্তু সব কিছুর উপরে যেটা বলতেই হয় তা হল, ওঁর চমক দেওয়ার দারুন প্রবণতা আছে, পাশাপাশি এও স্বীকার করতেই হয় যে তাঁর কোনও বাস্তবজ্ঞান বা কাণ্ডজ্ঞান নেই। আর সবের মাঝে সব থেকে বড় ক্ষতি হল বোধহয় টুইটারের। একটা ঘন অন্ধকারে তলিয়ে গেল টুইটারের ভবিষৎ।
অধিকাংশ সময় রাজনৈতিক নেতাদের মধ্যে যে প্রবণতা দেখা যায় সেটাই যেন এবার এলন মাস্কের মধ্যে দেখা গেল। ভারতীয় নেতারা ভোটের আগে অধিকাংশ সময়ই দারুন সব প্রতিশ্রুতি দেন। এই করে দেবেন, সেই করে দেবেন, সব বদলে একেবারে নতুন রূপ পাবে। কিন্তু ওই সব কথার কথা। ভোট ফুরালেই সবটাই যে ফাঁকা আওয়াজ ছিল সেটা প্রমাণ হয়ে যায়। এলন মাস্ক রাজনৈতিক নেতা নন, ভারতীয় তো একদমই নন। তবুও তাঁর মধ্যে এই গুণটি কিন্তু দারুন ভাবে আছে।
এলন মাস্কের সঙ্গে বিশ্বের একাধিক পুঁজিপতি এর দারুন বৈপরীত্য আছে। তাঁদের কথার দাম আছে। নীতি মেনে চলেন তাঁরা। উদাহরণস্বরূপ আমাদের দেশের রতন টাটার নাম করা যেতে পারে। কিন্তু এলন মাস্ক সেসব যেন মানেন না। এলন মাস্ক যে এত প্রতিশ্রুতি দিয়েও টুইটার কিনবেন না তা বেশ কদিন ধরেই বোঝা যাচ্ছিল। এই এত দামি ডিল, বলা ভাল 44 বিলিয়নের ডিল থেকে যে তিনি বিমুখ হচ্ছেন সেটা এবার আরও স্পষ্ট হল। তাঁর বিরুদ্ধে বহু মিথ্যে বলার অভিযোগ আছে। এও অভিযোগ আছে যে বিনিয়োগকারীদের ভুল তথ্য দিয়েছেন। তাঁদের ভুল পথে চালিত করেছেন।
এলন মাস্ক US Security and Exchange Commission এ জানিয়েছেন তিনি টুইটারের সঙ্গে হওয়া এই চুক্তি থেকে সরতে চান। তিনি চান না এই চুক্তিতে আর এগোতে। কারণ হিসেবে Elon Musk বলেছেন তাঁকে ভুল তথ্য দেওয়া হয়েছে। তাঁকে নাকি ভুল বিবৃতি দিয়ে ভুল পথে চালনা করা হয়েছে। যদিও সবাই বলছে এটা কেবলই একটা অজুহাত। কিন্তু এলন মাস্ক যতই বলুন তিনি টুইটার কিনছেন না, Twitter এর তরফে বলা হয়েছে তারা বিষয়টা দেখছে। এই চুক্তি যাতে সফল হয় তার জন্য যা যা করা প্রয়োজন তারা তাই করবে। প্রয়োজনে আইনি পথ ধরবে।
কোন কারণে Elon Musk টুইটার কিনতে চান না?
মাস্ক জানিয়েছেন টুইটার তাঁকে সঠিক তথ্য দেয়নি। টুইটারের কথা ছিল তাঁকে সমস্ত স্প্যাম এবং ফেক অ্যাকাউন্ট এর তথ্য দেওয়া। কিন্তু তারা সেটা তো দেয়নি, উল্টে গোপন করেছে। মে মাসেই তিনি এই বিষয়টি সামনে আনেন। আর তখনই তিনি এই চুক্তিকে হোল্ড করেন। এবং স্পষ্ট করে দেন যতদিন না টুইটার তাঁকে এই বিষয়গুলোতে সম্পূর্ন তথ্য দেবে ততদিন এই ডিল হোল্ড হয়েই থাকবে। টুইটারের তরফে দাবি করা হয়েছিল তাঁদের স্প্যাম এবং ফেক অ্যাকাউন্ট এর সংখ্যা মোট অ্যাকাউন্ট এর 5% এরও কম। কিন্তু তারা কোনও তথ্য দিতে পারেনি। আর তখনই এলন মাস্ক গোটা বিষয়টার উপর প্রশ্ন বসিয়েছেন। দু মাস ধরে নাকি এই তথ্যের জন্য অপেক্ষা করা হয়েছে, এমনটাই এলন মাস্ক আইনি টিম US Security and Exchange Commission কে জানিয়েছে। আর এই তথ্যগুলো যতদিন না এলন মাস্ক পাচ্ছেন ততদিন টুইটারের ঠিক মতো অ্যাসেসমেন্ট করা যাচ্ছে না। এমনটাই জানিয়েছে তাঁর লিগ্যাল টিম। তাদের মতে টুইটার ব্যর্থ সঠিক তথ্য দিতে। এলন মাস্কের কথার গুরুত্ব দিচ্ছে না টুইটার কখনও বা নানান চলে সেগুলো প্রত্যাখ্যান করছে বলেই জানিয়েছে এলন মাস্ক এর টিম। শুধু তাই নয় টুইটারের তরফে তাদের সিনিয়র এক্সিকিউটিভদের ছাঁটাই করা হচ্ছে যেটা তারা করতে পারে না। তাই তিনি এই চুক্তি থেকে পিছিয়ে যেতে চান।
আগামীতে তবে কী অপেক্ষারত?
এটা স্পষ্টই বোঝা যাচ্ছে যে আগামীদিনে টুইটার এবং এলন মাস্ক এর মধ্যে শীঘ্রই আইনি লড়াই শুরু হতে চলেছে। ব্রেট টেলর, যিনি টুইটারের চেয়ারম্যান তিনি জানিয়েছেন টুইটার বোর্ড সমস্ত নিয়ম মেনে এই লেনদেন শেষ করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। ডেলাওয়্যার কোর্ট অফ চ্যান্সারিতে তাঁদের হয় হবে বলে তিনি নিশ্চিত, এমনটাই দাবি করেছেন। 100 কোটি ডলারের ব্রেকআপ ফি ধার্য করা হয়েছে গোটা চুক্তিতে। অনেকেরই মতে এলন মাস্ক এর আগে টুইটারের সমস্ত ফেক অ্যাকাউন্ট এবং স্প্যাম অ্যাকাউন্ট সম্পর্কে তথ্য জানা উচিত ছিল। তারপর তিনি এই চুক্তি করতে পারতেন। কিন্তু তিনি কিছু না জেনেই চুক্তি করে ফেলেন। ফলে আগামীদিনে আইনি লড়াই হবেই।