একটা শিশু যেমন ভাবে গর্ভে ধারণ করা যায় সেভাবেই গর্ভ ধারণ হবে। জন্ম নেবে শিশুও। তবে সেটা মায়ের পেটে নয়। বরং গবেষণাগারে জন্ম হবে তার। এতটুকু পড়েই ভ্রু কুঁচকালেন? তাহলে বলি এখানেই চমকের শেষ নয়। আপনার সন্তানের চোখের মণি কেমন হবে, আপনার সন্তানের গায়ের রঙ, বুদ্ধি, ইত্যাদি কেমন হবে সবটাই ঠিক করতে পারবেন আপনিই। না এটা কোনও সায়েন্স ফিকশনের গল্প নয়। বরং খাঁটি বাস্তব। বাবা মা যেমন চাইবে তেমন ভাবেই তৈরি করা যাবে সন্তানকে।
হাশিম আল ঘাইলি। তিনি একজন বায়োটেকনোলজিস্ট। তাঁরা একটা পরিকাঠামো বানাচ্ছেন যাতে কৃত্রিম গর্ভে বেড়ে উঠতে পারে একটি শিশু। তাঁর ওয়েবসাইটে জানানো হয়েছে যে তিনি এখন সায়েন্স কমিউনিকেটর এবং মলিকিউলার বায়োলজিস্ট বাই ট্রেড। একই সঙ্গে তিনি ছবিও তৈরি করেন এবং সেটার প্রযোজনাও করেন। তবে এটা কি শীঘ্রই বাস্তবায়িত হতে চলেছে? না, এখনও গোটাটাই কল্পনার স্তরে আছে।
Ectolife নাম দেওয়া হয়েছে এই পরিকল্পনার। বলা হয়েছে এটা পৃথিবীর কৃত্রিম গর্ভ। এখানে বাবা মায়েরা তাঁদের পছন্দ মতো শিশু 'তৈরি' করে নিতে পারবেন। বিজ্ঞানী জানিয়েছেন গোটা পৃথিবীর 5 বছরের গবেষণার উপর এই ভাবনা দাঁড়িয়ে আছে।
ইংল্যান্ডের একটি সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে এই গোটা পরিকাঠামো চলবে পুনর্নবীকরণ শক্তির মাধ্যমে। জানা গিয়েছে এই পরিকল্পনার জন্য 75টি গবেষণাগার তৈরি করা হবে। আর এই সমস্ত গবেষণাগারে থাকবে 400টা করে কৃত্রিম গর্ভ। আর সেখানে মায়ের গর্ভের মতো বেড়ে উঠবে এক একটি শিশু। আর সেই শিশুর শরীরে থাকবে তাঁর বাবা মায়ের ইচ্ছে মতো সমস্ত বৈশিষ্ট্য।
এই কৃত্রিম গর্ভে শিশুটির পূর্ণ বিকাশ হয়ে গেলে একটা বোতাম টিপে দিলেই সেই গর্ভ থেকে বেরিয়ে আসবে শিশুটি। আর এক্ষেত্রে কোনও রকম শারিরীক জটিলতা, ব্যথা ছাড়াই একটা শিশুকে জন্ম দেওয়া যাবে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার একটি রিপোর্ট থেকে জানা গিয়েছে মায়ের নানান জটিলতার কারণে বহু শিশুর গর্ভেই জন্ম হয়ে যায়, জন্মের সময় নানান জটিলতা দেখা দেয়। শুধু তাই নয় এই প্রক্রিয়ায় শিশুর জন্ম হলে আগে থেকেই তার শরীরে কোনও সমস্যা থাকলে সেটা জানিয়ে দেওয়া যাবে। জিনগত সমস্যা থাকলে বলে দেবে এই সিস্টেম।
বিজ্ঞানী হাশিম আল ঘাইলি জানিয়েছেন এই পরিকাঠামো বাস্তবে করা সম্ভব। কিন্তু এটা করলে নানান নীতিগত দিক নিয়ে প্রশ্ন উঠবে। মানব ভ্রূণ নিয়ে পরীক্ষা করতে হবে নানান নীতি এবং নিয়ম মানতে হয়। ফলে এটার জন্য হয়তো এখনও বেশ কয়েক দশক অপেক্ষা করতে হবে।