এখন ব্যাংকে অ্যাকাউন্ট খোলা মানেই গ্রাহকরা একই সঙ্গে চেক বই, ক্রেডিট কার্ড, ডেবিট কার্ড পান। তাঁদের নামে ইস্যু করা হয় ব্যাংক থেকে। ডেবিট কার্ডের সাহায্যে আজকাল পেমেন্ট করা যায় অনলাইনে। শুধু তাই নয়, ব্যাংকে না গিয়েও এটিএম থেকে প্রয়োজন মতো টাকা তুলতে সাহায্য করে ডেবিট কার্ড। ফলে বর্তমান সময় ডেবিট কার্ডের গুরুত্ব এবং ব্যবহার দুই ভীষণ বেড়েছে। আর সেটা বাড়ার অর্থ হল জালিয়াতির সংখ্যা বাড়া। জানবেন যা আমাদের সাহায্য করে, জীবন সহজ করে সেটাই কিন্তু কঠিন করে তুলতে পারে সামান্য অসাবধানতার কারণে।
কোনও সাধারণ মানুষের রক্ত জল করা অর্থ হাতিয়ে নিতে সাইবার প্রতারকরা এখন নতুন পদ্ধতি অবলম্বন করেছে। তারা এখন এটিএম ক্লোনিং পদ্ধতিতে মানুষকে ঠকাচ্ছে। আপনি যে অনলাইন লেনদেন করছে সেটার সাহায্যে এটিএম মেশিনে কিছু অদল বদল করে আপনার জমানো সমস্ত পুঁজি কিন্তু ওরা হাতিয়ে নিতে পারে। আর এটার ফলে যে আপনাকে নিঃস্ব হতে হবে সেটা নিশ্চয় আর নতুন করে বলতে হবে না।
আমরা যত ডিজিটাল হচ্ছি যত ক্যাশ লেনদেন কমছে, বা যত ব্যাংকে যাওয়া কমাচ্ছি আমরা তত বেশি বাড়ছে ডেবিট কার্ডের ব্যবহার। গত কয়েক বছরে এই কার্ডের ব্যবহার ভীষণ বেড়ে গিয়েছে। আজকাল অনেকেই ব্যাংকে যেতে চান না খুব প্রয়োজন না হলে। শেষবার কবে ব্যাংকে গিয়েছে এই প্রশ্ন করলে অনেকেই হয়তো মাথা চুলকাবেন। আর আপনার এই অভ্যেসের সুযোগ নিচ্ছে সাইবার প্রতারকরা। আপনি সময় বাঁচাতে ডেবিট কার্ডের সাহায্যে এটিএম থেকে টাকা তোলেন? আর সেখানেই লুকিয়ে আছে ফাঁদ। প্রতারকরা এটিএমে ক্যামেরা ফিট করে রাখে। আর সেখানেই আপনার কার্ডের নম্বর সহ পিন উঠে আসবে। আর সেটাকে কাজে লাগিয়ে একটি বিশেষ যন্ত্র ইনস্টল করে আপনার ডেবিট কার্ডের অনুরূপ আরেকটি কার্ড বানিয়ে নেবে। আর ব্যাস সেটা হওয়া মানেই আপনি হিসেবে ওরা এটিএম থেকে টাকা তুলে নিতে পারবে নিজেদের ইচ্ছে মতো। আর সর্বস্ব হারাতে হবে আপনাকে।
একটা সময় পর পর আপনার ডেবিট কার্ডের পিন পাল্টে ফেলুন। শুধু তাই নয়, ঘন ঘন টাকা তোলার অভ্যেস ছাড়ুন। মাসে কত টাকা লাগে একটা আন্দাজ আছে নিশ্চয়? সেটাকে কয়েক ভাগে ভেঙে ততবার টাকা তুলুন। ধরা যাক আপনার 20হাজার লাগে প্রতিমাসে, দুবারে 10-10 করে তুলে নিন, 1-2-5 হাজার করে তোলার বদলে। একই সঙ্গে কতটা টাকা এটিএম থেকে তোলা যাবে একবারে সেটাও সেট করে দিন। এর ফলে প্রতারকরা একবারে অনেক টাকা তুলতে পারবে না, এবং তুললেও আপনার কাছে মেসেজ যাবে। কোনও এটিএম ব্যবহার করার আগে চারপাশ ভালো করে দেখে নিন। কিপ্যাডের উপরের অংশে বিশেষ নজর রাখুন। ফাঁকা নির্জন জায়গায় এটিএম ব্যবহার না করাই শ্রেয়।
যখনই আপনি এটিএম মেশিনে আপনার ডেবিট কার্ডের পিন দেবেন তখন সেটাকে হাত দিয়ে ঢেকে দিন। এটার ফলে কেউ আপনার পাসওয়ার্ড দেখতে পাবে না। ইএমভি চিপ আছে এমন কার্ড ব্যবহার করুন ম্যাগনেটিক কার্ডের বদলে। মনে রাখবেন প্রথম কার্ড ক্লোন করা সহজ নয়। তাই ব্যাংকে এখনই এই কার্ডের জন্য আবেদন করুন। শপিং মলের POC মেশিন কিন্তু OTP ছাড়াই লেনদেন করে। ফলে সুরক্ষিত কার্ড ব্যবহার করুন এক্ষেত্রে। এটিএম থেকে টাকা তোলার পরিমাণ অবশ্যই সেট করে নিন।