এই তো সেদিন কাজ করছি। আচমকাই ফোনটা বেজে উঠল। দেখলাম WhatsApp -এ কেউ কল করছে। কিন্তু তার নম্বর সেভ নেই। ফোন ধরার আগেই খেয়াল করলাম এটা ভারতের নয় বরং মালয়েশিয়ার নম্বর। দুইয়ে দুইয়ে চার করতে অসুবিধা হল না যে এটা একটা ফেস স্প্যাম কল। অগত্যা ব্লক করলাম।
আসলে আমি একা নই, অধিকাংশ WhatsApp ব্যবহারকারীরা এই সমস্যার মধ্যে পড়েছেন। নিত্য নতুন নম্বর দিয়ে কল, মেসেজ ইত্যাদি করতে থাকছে প্রতারকরা।
WhatsApp এমনই একটা অ্যাপ যা বন্ধু, পরিবার, সহ অফিসের কলিগদের সঙ্গে সহজেই যোগাযোগ করতে দেয়। বিশ্বজুড়ে এই অ্যাপের কয়েকশ কোটি ব্যবহারকারী আছে। এই অ্যাপের তরফে ব্যবহারকারীদের তথ্য থেকে ব্যক্তিগত চ্যাট সমস্ত নিরাপদ রাখার আশ্বাস দেওয়া হয়।
প্রায় প্রতি সপ্তাহে এই অ্যাপ কোনও না কোনও আপডেট নিয়ে আসে এই অ্যাপ। কিন্তু মাঝে মধ্যে এই অ্যাপ আবার প্রতারকদের খপ্পরে পড়ে।
এই প্রতারকরা WhatsApp -এর মাধ্যমে মানুষকে ঠকিয়ে তাঁদের ব্যক্তিগত তথ্য, ব্যাংক ডিটেলস হাতিয়ে নিচ্ছে। এই ফোনগুলো মূলত বিদেশি নম্বর থেকে আসছে। ইথিওপিয়া (+251), মালেশিয়া (+60), ইন্দোনেশিয়া (,+62) , কেনিয়া (+254), ভিয়েতনাম (+84) -এর নম্বর থেকেই এই কল আসছে।
তবে যতই এই ফোন কলে অন্যান্য দেশের কোড দেখাক বা কেন এর মানে এটা নয় যে সেটা এই ওই নির্দিষ্ট দেশ থেকেই আসছে। মনে রাখবেন WhatsApp কল ইন্টারনেটের সাহায্যে আসে।
কিছু মিডিয়া রিপোর্টে জানানো হয়েছে কিছু নির্দিষ্ট এজেন্সি আছে যারা আন্তর্জাতিক নম্বর বিক্রি করছে আপনারই মতো। হয়তো সেই আপনার শহরেই থাকে। আর এই নম্বরের সাহায্যেই WhatsApp -এ কোনও রকম আন্তর্জাতিক কল চার্জ না দিয়েই ফোন করছে তারা।
টুইটারে একাধিক ব্যক্তি জানিয়েছেন যে তাঁরা এই সমস্যার সম্মুখীন হয়েছেন। একাধিকবার সেখান থেকে কল পেয়েছেন।
এমন কোনও স্প্যাম কল পেলে স্রেফ সেটাকে ধরবেন না। কোনও অজানা আন্তর্জাতিক নম্বর থেকে কল এলে সেটা ধরাই উচিত নয়। তাই আচমকা এমন কোনও এলে ধরবেন তো নাই, সঙ্গে দ্রুত সেই নম্বর ব্লক করে দিন। এরা কিন্তু নইলে সুযোগ পেলে আপনার ব্যক্তিগত তথ্য সহ ব্যাংকের ডিটেল হাতিয়ে নেবে।
এছাড়া আরও একটি ধরনের প্রতারণা চক্র এখন WhatsApp -এ সক্রিয় আছে। এখানে চাকরি দেওয়ার নাম করে মেসেজ করা হচ্ছে।
এখানে কোনও বড় কোম্পানির নাম করে চাকরি অফার করা হচ্ছে। প্রথমে অল্প কাজ আর অল্প টাকা দিয়ে ব্যবহারকারীদের মন জিতে নিচ্ছে। তারপরই যে বেশি কাজ করতে যাচ্ছে তখনই বিপদের সম্মুখীন হচ্ছেন তাঁরা। এই বিষয়েও একাধিক ব্যক্তি টুইট করে অভিযোগ করেছেন।
ইন্টারনেটের দুটো দিক আছে, যেমন ভাল দিক আছে তেমন মন্দও আছে। তাই নিজেকে যে কোন বিপদ থেকে বাঁচাতে সতর্ক থাকতে হবে। ইন্টারনেটে বিশ্বাসযোগ্য, ভরসা যোগ্য মানুষের সঙ্গে কথা বলুন। কখনও যার তার অ্যাকাউন্টে টাকা পাঠাবেন না বা নিজের ব্যাংকের তথ্য দেবেন না অচেনা কাউকে।