গত তিন বছর ধরে মাঝে মধ্যেই একাধিক অ্যাপকে ব্যান করেছে ভারত সরকার। ধরা যাক 2020 সালের কথাই। সেই বার তো বহু অ্যাপ সরকারের তরফে নিষিদ্ধ ঘোষণা করে দেওয়া হয়েছিল দেশে। অভিযোগ ছিল এই সব অ্যাপের সঙ্গে চিনের যোগাযোগ আছে। যবে থেকে দুই দেশের সীমান্তে নতুন করে অস্থিরতা তৈরি হয় তবে থেকে বেজিংকে এক প্রকার শিক্ষা দিতেই এমন একাধিক সিদ্ধান্ত নিতে শুরুর করে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার। এবার সেই পথেই হেঁটে এবং একই অভিযোগে দেশে নতুন করে 200 টির বেশি অ্যাপ নিষিদ্ধ ঘোষণা করে দেওয়া হল।
সূত্রের খবর অনুযায়ী মোট 232 টি অ্যাপকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। ইলেকট্রনিক্স এবং তথ্য প্রযুক্তি মন্ত্রকের তরফে এই অ্যাপগুলোকে নিষিদ্ধ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। যে অ্যাপগুলো কে নিষিদ্ধ করার কথা বলা হয়েছে সেগুলোর মধ্যে 138টা বেটিং অ্যাপ এবং 94 টি লোন অ্যাপ আছে। ইতিমধ্যেই এই অ্যাপগুলো কে ব্যান বা ব্লক করার যে প্রক্রিয়া সেটা শুরু হয়ে গিয়েছে।
এটাই প্রথম নয় যে এই ধরনের অ্যাপকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হল। এ আগেও দেশের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের তরফে এমন 288টি চাইনিজ লোন অ্যাপের বিরুদ্ধে অভিযোগ আসায় তদন্ত শুরু করা হয়ে ছিল মাস ছয় আগেই। এই 288 টি অ্যাপের মধ্যে 94 টি অ্যাপ সাধারণ মানুষ Google Play Store থেকে ডাউনলোড করতে পারছিল। আর বাকিগুলো ডাউনলোড করার জন্য থার্ড পার্টি অ্যাপের সাহায্য নিতে হচ্ছিল। এমনই খবর জানা গিয়েছে ANI সূত্রে।
জানা গিয়েছে যেহেতু এই অ্যাপগুলোর সঙ্গে চিনের যোগাযোগ আছে সেহেতু মনে করা হচ্ছে এই অ্যাপের মাধ্যমে ভারতীয় নাগরিকদের নানা তথ্য চিনের কাছে চলে যাচ্ছে। এর ফলে দেশের জাতীয় নিরাপত্তায় প্রশ্ন চিহ্ন দেখা দিচ্ছে। সরকারি আধিকারিকরা এই বিষয় আপোষ করতে নারাজ। একটি রিপোর্টে কিছুদিন আগে জানানো হয় যে চিনের তরফে এই অ্যাপগুলোর সাহায্যে গুপ্তচর বৃত্তি চালানো হচ্ছে ভারতে। এর ফলে দেশের নাগরিকদের নানা ব্যক্তিগত তথ্য চলে যাচ্ছে চিনের কাছে।
সব থেকে বড় কথা কী জানেন? এই অ্যাপগুলোর মাথায় বসে আছেন সমস্ত চিনা নাগরিকরা। কিন্তু ভারতের অফিসে বসিয়ে রেখেছেন একজন ভারতীয়কে, যাতে সরকারের নজর এই অ্যাপগুলোতে না পড়ে। তাছাড়াও জানা গিয়েছে যে ভারতীয় নাগরিকদের ব্যাপক পরিমাণের ঋণের টোপ দিচ্ছিল এই অ্যাপগুলো। এই টোপ দিয়েই তাঁদের ফাঁদে ফেলছিল অ্যাপগুলো।
জানা গিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে একাধিক রাজ্য যেমন তেলেঙ্গানা, ওড়িশা, উত্তরপ্রদেশের মতো রাজ্য থেকে এই অ্যাপগুলোর বিরুদ্ধে অভিযোগ জানানো হয়। একই সঙ্গে পদক্ষেপ নেওয়ার কথাও বলা হয়। গ্রাহককে প্রথমে ব্যাপক ঋণের লোভ দেখিয়ে কখনও কখনও তাঁদের থেকে 3,000% সুদের দাবি করত বলে শোনা গিয়েছে। তখন যাঁরা এই সুদ দিতে পারছে না তখন তাঁদের নানা সামাজিক হেনস্থা থেকে অন্যান্য ভাবে ক্ষতি করার হুমকি দেওয়া হচ্ছে। ফলে এখান থেকে স্পষ্ট যে অ্যাপগুলো দ্রুত দেশ থেকে ব্যান করা হোক। আর সেই কারণেই ইলেকট্রনিক্স এবং তথ্য প্রযুক্তি মন্ত্রক এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে।