আমাদের ফোনে এমন একাধিক অ্যাপ আছে যেগুলো একটু ঘাঁটাঘাঁটি করলেই ব্যাটারি দ্রুত নিঃশেষ হয়। এর মধ্যে বলা যেতে পারে ফেসবুক বা ইনস্টাগ্রামের কথা। দু ক্ষেত্রেই আপনি যদি রিলস দেখেন তাহলে হুহু করে ব্যাটারির চার্জ ফুরিয়ে আসে। প্রথম প্রথম ভীষণ প্রভাব ফেলে এগুলো ফোনে উপর। এবং আমাদের অজান্তেই এরপর ধীরে ধীরে ফোনটাকে শেষ করে দেয়। তবে এখন ফেসবুকের এক প্রাক্তন কর্মী যা দাবি করলেন সেটা শুনে চমকে উঠতে হয়! এই প্রাক্তন ফেসবুক কর্মীর কথা অনুযায়ী এই সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাপ নাকি জেনে বুঝেই আপনার ফোনের ব্যাটারি শেষ করে।
এই প্রাক্তন ফেসবুক কর্মীর নাম জর্জ হ্যাওয়ার্ড। তিনি একজন ডেটা সায়েন্টিস্ট। তিনি জানিয়েছেন ফেসবুক নাকি একটি পরীক্ষা করে, সেই পরীক্ষার নাম নেগেটিভ টেস্টিং। এটা গোপনে করা হয়ে থাকে। আর তাতেই ব্যবহারকারীর ফোনের ব্যাটারি ধ্বংস হয়। তিনি নিউ ইয়র্ক পোস্টের কাছে এমন অভিযোগ করেছেন। কিন্তু কেন করা হয় এই পরীক্ষাগুলো? জানা গিয়েছে এই অ্যাপের যে বিভিন্ন ফিচার আছে বা সমস্যা আছে সেগুলোর উপর পরীক্ষা চালানোর জন্য তারা এই পরীক্ষা করে থাকে।
মূল উদ্দেশ্য হল ফেসবুকের স্পিড কত, কত জলদি ছবি লোড হচ্ছে, ইত্যাদি পরীক্ষা করে দেখা। সে পরীক্ষা করছে করুক, কিন্তু অসুবিধা কোথায়? জর্জের কথা অনুযায়ী ব্যবহারকারীরা নাকি জানতেই পারেন না যে তাঁর ফোনে ফেসবুকের তরফে এমন কোনও পরীক্ষা করা হচ্ছে।
জর্জ হ্যাওয়ার্ড ফেসবুকের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন। তিনি আদালতের কাছে জানান যে এই পরীক্ষা অত্যন্ত ক্ষতিকর। আগামী দিনে এই পরীক্ষা চালিয়ে গেলে সেটা আরও বড় কোনও ক্ষতির কারণ হতে পারে। বাড়তে পারে বিপদের ঝুঁকিও। তিনি গোটা বিষয়টা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।
তিনি জানিয়েছেন যে তিনি একবার ফেসবুকের এক ম্যানেজারকে বলেছিলেন এটা ক্ষতিকর, এতে কারও ক্ষতি হতে পারে। কিন্তু তাঁকে নাকি তখন উত্তর দেওয়া হয়েছিল এক আধজনের ক্ষতি হলেও অধিকাংশ মানুষের এতে সুবিধা হবে। ফেসবুকের এই প্রাক্তন কর্মী তাঁর প্রাক্তন সংস্থার বিরুদ্ধে ম্যানহ্যাটন ফেডারেল কোর্টে মামলা করেছেন। তিনি জানান তিনি এই নেগেটিভ টেস্টিংয়ে অংশ নিতে চাননি আর সেই কারণেই তাঁকে চাকরি খোয়াতে হয়েছিল। Facebook এর মেসেঞ্জার অ্যাপে কাজ করতেন তিনি।
তবে এই নেগেটিভ টেস্টিংয়ের জন্য কতজন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন? এই বিষয়ে একদম সংখ্যা বলে দিয়েছেন জর্জ। কতজন এটার ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন সেটা তাঁর জানা। ফেসবুক তাঁর হাতে একটি ইন্টারনাল ট্রেনিং ডকুমেন্ট দেয় এবং তারপরই এই নেগেটিভ টেস্টিং শুরু করে। সেই ডকুমেন্টে লেখা হয়েছিল যে চিন্তাশীল নেতিবাচক পরীক্ষা চালানোর পদ্ধতি। এই উপায়ে ফেসবুক ব্যবহারকারীকে না জানিয়েই তাঁর ফোনের উপর রিমোট পদ্ধতিতে নানা পরীক্ষা চালায়। আর এতেই জেনে বুঝে নিঃশেষ হয়ে যায় ব্যবহারকারীর ফোনের চার্জ।
জর্জ এই ডকুমেন্টের প্রসঙ্গে বলেছেন যে তিনি নাকি তাঁর কর্মজীবনে এর থেকে ভয়ঙ্কর কোনও ডকুমেন্ট দেখেননি। তবে জর্জ যতই অভিযোগ করুন না কেন নেগেটিভ টেস্টিং নিয়ে Facebook বা Meta কারও তরফেই এখনও কোনও উত্তর মেলেনি।