মানুষের নিজেদের কাজের সুবিধার জন্য সবকিছুকে ডিজিটাল করে নিয়েছে৷ তবে অনলাইনেও প্রতারকদের স্ক্যাম মানুষের পিছু ছাড়েনি। মাঝে-মধ্যেই শোনা যায় নতুন নতুন স্ক্যাম/প্রতারণার কথা। এবারের প্রতারণায় হ্যাকাররা সাধারণ মানুষকে একটি নতুন অ্যাপ ইন্সটল করতে বলছে। সেই অ্যাপ মানুষ না বুঝে নামিয়ে ফেললেই বিপত্তি। এতোদিনের কষ্টের সঞ্চয় সব নিমেষে হয়ে যাবে সাফ। ভারতে বছরের পর বছর প্রতারকের সংখ্যা বেড়েই চলেছে৷ প্রশাসন বারংবার তাদের ধরলে বা আটকালেও আবার নতুন ভাবে নতুন স্ক্যামার চলে আসে মার্কেটে। আপনার ব্যাঙ্ক একাউন্ট ফাঁকা করাই তাদের লক্ষ্য। ফলে এদেরকে পুরোপুরি আটকানো সম্ভব না হওয়ায় আপনাদেরকেই হতে হবে সচেতন।
এই নতুন ফাঁদে হ্যাকাররা আপনাকে প্রথমে একটি টেক্সট মেসেজ পাঠাবে। সেই মেসেজে লেখা থাকবে যে আপনার সিম কার্ডটি চালু রাখতে নির্দিষ্ট ডকুমেন্টস জমা করতে হবে। না করলে, 24 ঘন্টার মধ্যে কানেকশন বন্ধ করে দেওয়ার হুমকি আসবে। অনেক মানুষই ভয়ে বা অজান্তে remote access অ্যাপটি ওই লিঙ্কে ক্লিক করে ডাউনলোড করে ফেলে। একবার এই অ্যাপ আপনি ফোনে ইনস্টল করে নিলে আপনার ফোনের স্ক্রিনে যা যা দেখাবে তা সব দেখতে পাবে প্রতারকরা।
এর পাশাপাশি ওই মেসেজে একটি নম্বর দেওয়া থাকবে। যে নম্বরে 24 ঘন্টার মধ্যে কল করে কানেকশন চালু রাখার কথা বলা হয়। এই নম্বরে ফোন করলে মানুষ নিজের বিপদ নিজে ডেকে আনবে। ফোন করলে সিম কার্ড চালু রাখার জন্য e-KYC প্রসেস কম্পলিট করার কথা জানানো হবে। এই জন্য AnyDesk নামের একটি রিমোট অ্যাকসেস অ্যাপ ডাউনলোড করতে বলবে হ্যাকাররা। এই অ্যাপ ব্যবহার করে বিশ্বের যে কোন প্রান্তে বসে আপনার ডিভাইসের কন্ট্রোল করা সম্ভব। এইভাবে আপনার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের ডিটেইলস হ্যাক করার চেষ্টা করা করবে স্ক্য্যামাররা। এর পরে আপনার অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা নিজেদের অ্যাকাউন্টে ট্রান্সফার করে নেবে হ্যাকাররা। ট্রানজাকশন শেষ করার জন্য যখন আপনার ফোনে OTP আসবে তা আপনি হ্যাকারদের না জানালেও তারা নিজেরাই দেখে নিতে পারবে Anydesk এর সাহায্যে। এরপর চোখের সামনে নিমেষে আপনার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট সম্পূর্ণ খালি হয়ে যেতে দেখতে পারেন।
নেটওয়ার্ক প্রোভাইডাররা এই ধরনের মেসেজ পাঠালে কোনো ফোন নম্বর দিয়ে পাঠায়না বরং শুরুতে নেটওয়ার্ক প্রোভাইডারের নামের অক্ষর থাকে। এছাড়া, মেসেজে কোনো রকম গ্রামাটিকাল মিস্টেক থাকবেনা। শুধুমাত্র নেটওয়ার্ক প্রোভাইডার অফিসাররাই আপনার e-KYC প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ করতে পারেন। তার জন্য আপনাকে আলাদা করে কোনো অ্যাপ নামাতে হবেনা।
ব্যাঙ্ক থেকেও বারংবার সাবধান করা হয় এই ধরনের স্ক্যামের হাত থেকে মানুষকে দূরে থাকতে। তারা সাবধান করে যে, ব্যাঙ্ক কোনোদিন আপনার অ্যাকাউন্ট নম্বর অথবা ক্রেডিট ও ডেবিট কার্ডের নম্বর জানতে চাইবেনা। ব্যাঙ্ক আপনার মোবাইলের OTP অথবা পাসওয়ার্ড ও জানতে চাইবেনা। কোনো ব্যক্তি এসকল ডেটা আপনার দিয়ে জানতে চাইলে বুঝবেন ব্যক্তিটি ঠক-প্রতারক। এসকল ফোনকল / মেসেজের রেসপন্স করবেন না এবং ভুলেও কোনো রকম অ্যাপ নামাবেন না। যদি কোনো রকম সমস্যা হয় তো নেটওয়ার্ক প্রোভাইডারের হেল্প লাইন নম্বরে কল করবেন, অথবা নিজের ব্যাঙ্কে গিয়ে কথা বলবেন।