আমরা অনেকেই গুগল সার্চের উপর নানা বিষয়ে ভরসা করে থাকি। সে কোনও তথ্য জানার জন্য হোক বা কোনও অফিস বা সংস্থার ঠিকানা বা ফোন নম্বর এমনকি রিভিউ ইত্যাদি জানার জন্য। তবে আপনি যদি হামেশাই চটজলদি উপায়ে তথ্য খোঁজার জন্য গুগলের উপর ভরসা করে থাকেন তাহলে আপনাকে সাবধান করে দিই। এতে কিন্তু আপনি বিপদে পড়তে পারেন। প্রতারকরা কিন্তু ওয়েব দুনিয়ায় জাল বিছিয়ে রেখেছে। ফলে আপনি Google যে তথ্য দেখছেন সেটা যে সবসময় ঠিক হবে এমনটা কিন্তু একদমই নয়। হতেই পারে সেই তথ্য ভুল। যে লিংক দেখছেন সেটা সত্যি নাও হতে পারে। হতেই পারে ভুয়ো। সত্যি ভেবে ক্লিক করলেই পড়বেন ঠগবাজদের হাতে। আপনার তথ্য তখন ওরা হাতিয়ে নিয়ে আপনাকে সর্বস্বান্ত করতে পারে। তাই কোনও তথ্য, বিশেষ করে কাস্টমার কেয়ার নম্বর নেওয়ার হলে বা ওয়েবসাইটের ব্যাপারে জানার হলে অতিরিক্ত সতর্ক হন। এখন প্রশ্ন কী করে বুঝবেন কোন কাস্টমার কেয়ার নম্বর আসল? দেখুন।
এটা নানা ভাবে তারা করতে পারে। Google -এ হেলথ থেকে শুরু করে ব্যাংকিং পরিষেবা, সহ আর্থিক প্রতিষ্ঠান, বিভিন্ন অফিস, টেলিকম সংস্থা সহ বহু সংস্থার ভুয়ো ওয়েবসাইট বানিয়ে রাখে প্রতারকরা। এবার এই ওয়েবসাইটগুলোকে আচমকা দেখলে মনে হবে বুঝি এক। কিন্তু আদতে সেটা নয়। আর এখানে থাকা কাস্টমার কেয়ার নম্বর বা সাইটের লিংক যে ভুয়ো থাকে সেটাও বলাই বাহুল্য। কিন্তু অনেকেই সেটা না বুঝে ক্লিক করে ফেলেন লিংকে বা কল করেন। আর নিজের অজান্তেই সাধারণ মানুষ এভাবে নিজের তথ্য প্রতারকদের কাছে দিয়ে দেন। আর সেটার সুযোগ নেন জালিয়াতরা।
দেখুন সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন বলে একটি জিনিস হয়। সেটা ব্যবহার করে এই প্রতারকরা নিজেদের ওয়েবসাইটকে এমন ভাবে সাজায় যাতে আপনি যেটা খুঁজছেন এটা লিখে সার্চ করলেই এই ভুয়ো ওয়েবসাইট সবার আগে দেখা যায়।
1. এমন সিম কার্ড ব্যবহার করে এই প্রতারকরা যার নাগাল সহজে পাওয়া যায় না। এটার জন্য তারা ডার্ক ওয়ার্ল্ডকে ব্যবহার করে থাকে।
2. যেহেতু তারা নিজেদের পরিচয় গোপন রেখে ভুয়ো নথি দিয়ে সিম কার্ড কেনে সেহেতু ধরা পড়ার ভয় এদের থাকে না।
3. Google -এ এই ভুয়ো নম্বর দেওয়া থাকে বিভিন্ন ভুয়ো ওয়েবসাইটে।
4. আগে যেমনটা বলা হল SEO -এর উপর ভিত্তি করে এই ওয়েবসাইটগুলোকে সার্চ লিস্টে সবার উপর তুলে আনা হয়। ফলে আপনি সার্চ করলে এক নম্বর দেখতে পাবেন।
5. এবার আপনার প্রয়োজন বলেই না আপনি সার্চ করেছেন। আর যেই দেখলেন সেই কাঙ্খিত নম্বর আছে, আপনি তাতে ক্লিক করে বসেন।
6. যেই ক্লিক করলেন অমনি আপনি এই ভুয়ো সংস্থার পাতা ফাঁদে পা দিয়ে দিলেন। আর ব্যাস অমনি এই সংস্থা চেষ্টা করতে থাকবে কী করে আপনার নানা তথ্য হাতিয়ে নেওয়া যায়।
7. আর যদি সাধারণ মানুষকে বুঝিয়ে তাঁদের থেকে OTP বা অন্যান্য জরুরি তথ্য তাঁরা নিয়ে ফেলতে পারে তাহলেই কেল্লাফতে!
8. এমনকি উপহারের লোভ দেখিয়ে কখনও ATM কার্ড বা ব্যাংকের তথ্য নিয়ে নেওয়া হয়। এতেই সাধারণ মানুষকে হতে হয় সর্বস্বান্ত।
1. ওয়েবসাইট থেকে নম্বর নিয়ে ফোন করার আগে ভালো করে সাইটটি পড়ে দেখুন। দেখুন URL- এর পাশে তালা চিহ্ন আছে কিনা। যদি দেখেন তালা আছে তাহলে বুঝবেন সেই অ্যাকাউন্ট বা ওয়েবসাইট নিরাপদ।
2. কোনও নম্বর বা সাইটে যাওয়ার আগে সেই ওয়েবসাইট বা সংস্থার রিভিউ পড়ুন ভালো করে।
3. যদি ফোনের ওপার থেকে আপনার ব্যাংকের তথ্য বা OTP চায় তাহলে বুঝবেন এটা প্রতারণার জাল। ব্যাংক কখনও আপনার অ্যাকাউন্টের বিষয়ে কোনও তথ্য জানতে চাইবে না।
4. আপনাকে যদি কোনও ব্যক্তি কোনও ক্লিক বা কিছু পাঠায় কোনও কাস্টমার কেয়ারের প্রতিনিধি হিসেবে তাতে বিশ্বাস করবেন না।