ভারতে 5G নেটওয়ার্কে আসার আগে জেনে নিন 4G এবং 5G নেটওয়ার্কের মধ্যে কী পার্থক্য…
4G র থেক অনেক বেশি দ্রুত হবে 5G
5G আর 4G র মুল পার্থক্য লিটেনসিতে
ভারেতও আসতে চলেছে 5G স্মার্টফোন
পৃথিবীর বিবর্তনের ইতিহাসে মানব সভ্যতার প্রতিটি ধাপ একএকটি যুগ হিসাবে চিহ্নিত। কখনও তা ব্রোঞ্জ যুগ, কখনও তাম্র বা ইত্যাদি নামে ইতিহাসের পাতায় অভিহিত হয়েছে। আজ মানব সভ্যতার উন্নতির যে সময়ে আমরা বসবাস করছি সেই সময়কে যদি প্রযুক্তি যুগ বলা হয় তবে ভুল কিছু ব লা হবে না।
আর যদি আরও স্পেসিফিক ভাবে বলতে চাই তবে এই সময় যে স্মার্ট যুগ বা স্মার্টফোনের যুগও বলা যায়। অ্যালেকজান্ডার গ্রাহাম বেল যখন প্রথম টেলিফোন আবিষ্কার করেছিলেন সেই সময়ে আঠেরোশো শতকের সেই প্রথম আবিষ্কার চিরকাল আমাদের আজকের স্মার্টফোন যুগের পুরোধা হিসাবে থেকে যাবে।
সেদিনের সেই টেলিফোন থেকে আজকের স্মার্টফোনের দীর্ঘ যাত্রা পথের গল্পও আমরা কোন এক সময়ে বলব। তবে আজকের আলোচনার বিষয়ে স্মার্টফোনের অন্যতম বড় বা বলা ভাল এমন জিনিস যা ছাড়া স্মার্টফোনের কথা আমরা ভাবতে পারিনা বা যা ছাড়া ফুল চার্জ স্মার্টফোনও আমাদের সবার কাছে বেকার সেই কানেক্টিভিটির কথা। বা আরও স্পেসিফিকালি বললে বলতে হয় যে এই সময়ের 4G কানেক্টিভিটির থেকে আগামী 5G কানেক্টিভিটির কিছু কথা।
আমাদের সবার স্মার্টফোনই এখন 4G কানেকশান যুক্ত আর এবার আসতে চলেছে কানেক্টিভির পঞ্চম জেনারেশানে 5G. 2000 য়ের শেষের দিকে কানেক্টিভিটির চতুর্থ প্রজন্ম 4G এসেছিল। আর 4G আসার পর থেকে কানেক্টিভিটির ট্র্যাক দারুন স্পিডে এগিয়ে যেতে থাকে। আর এবার আসতে চলেছে 5G। সাধারনতন 4G কানেক্টিভিটি 3G কানেকশানের থেকে 500 গুন বেশি দ্রুত আর এটি আমাদের ফোনে হাই কোয়ালিটির ভিডিও কল, HD TV দেখা এই সব আমরা 4G কানেকশানের জন্যই করতে পারি। 4G অনেক দ্রুত মোবাইল প্রযুক্তি যা স্মার্টফোন আর ট্যাবলেটের মতন ডিভাইসের কানেক্টিভিটির সজ্ঞাই বদলে দিয়েছে।
আর এই সময়ে সারা বিশ্বে তো বটেই আমাদের দেশেরও প্রায় সব প্রান্তে 4G কানেকশান এসেছে আর যা আমাদের একে অপরের সঙ্গে যোগাযোগ রাখার প্রক্রিয়াকে আরও শজ্জ করেছে। তবে ঐ যে কথায় বলে না যে কোন কিছু থেমে থাকে না সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সব কিছু এগিয়ে যায়। আর আরও একবার সেই এগিয়ে যাওয়ার প্রক্রিয়া বজায় রেখে কানেক্টিভিটি প্রযুক্তির সময় হয়েছে যে তারা 4G থেকে 5G তে যাচ্ছে। যদিও 4G খুব দ্রুত গতির কানেক্টিভিটি দেয় কিন্তু এখন তার পক্ষেও এই বাড়তে থাকা ব্যাস্ততা আর দ্রুততাকে টেনে নিয়ে যাওয়া সম্ভব হচ্ছে না। কানেকশান এত বেশি যে এই নেটওয়ার্কও এবার ধিরে ধিরে বাল্যাবস্থা থেকে প্রৌরত্বের দিকে একটু তাড়াতাড়ি এগোচ্ছে। মনে করা হচ্ছে যে 2020 সালের মধ্যে 20 বিলিয়ানের বেশি কানেকশান এসে যাবে, আর এই সব কিছুরই কিন্তু খুব ভাল ক্যাপাসেটির কানেকশান দরকার হবে। আর এই সবের জন্যই এবার 5G র আসার সময় হয়েছে।
এর মধ্যে সারা বিশ্ব বেশ কিছু 5G কানেক্টিভিটির ফোন লঞ্চ হয়েছে। আর ভারতেও এবার 5G কানেকশানের ফোন লঞ্চ হতে চলেছে বলে খবর পাওয়া গেছে। যদিও ভারতে এখনও 5G কানেক্টিভিটি আসেনি। তবে হ্যাঁ সিঁড়ির ধাপের মতনই 5G ফোন এলে তাও ভারতের 5G কানেক্টিভিটির প্রথম ধাপ হবে বলেই আমাদের বিশ্বাস।
প্রথম 2018 সালে 5G কানেক্টিভিটির কথা আসে আর 2019 সালে 5G কানেক্টিভিটি নিয়ে আসে দক্ষিণ কোরিয়া।
4G আর 5G র মধ্যে পার্থক্য কোথায়?
এবার আমরা দেখব যে 4G আর 5G র মধ্যে পার্থক্য ঠিক কোথায়? খুব সোজা ভাষায় বলতে গেলে বলতে হয় যে 5G আসলে 4G র থেকে অনেক বেশি ক্যাপাসেটির, বড়, দ্রুত আর আরও বেশি এফেক্টিভ। এটি মোবাইল ডাটা স্পিড আর এখনকার দ্রুততম হোম ব্রডব্র্যান্ডের থেকে অনেক বেশি দ্রুত। প্রতি সেকেন্ডে 100 গিগাবাইটের স্পিড নিয়ে 5G 4G র থেকে 100 টাইম বেশি দ্রুত।
4G আর 5G র মুল পার্থক্য লো লেটেন্সি। লেটেন্সি হল সেই জিনিস যা কোন তথ্য একটি ডিভাইস থেকে পাঠানোর সময় থেকে রিসিভারের কাছে তা ব্যাবহারের সময়। লেটেন্সি কম হওয়ার মানে এই যে আপনি আপনারা ফোনের ডাটা আপনারা কেবেল মোডেম আর Wi-Fi য়ের কাজ করতে পারবেন। আর এর সঙ্গে আপনারা সহজে কোন কিছু আপলোড বা ডাউনলোড করতে পারবেন, বলা ভাল মুহূর্তের মধ্যে এই সব কাজ করতে পারবেন। আপনাদের ফোনের কানেকশান আচমকা বন্ধ হওয়ার মতন সমস্যায় পরতে হবে না। আর আপনারা একটি 4K ভিডিও প্রায় প্রথম থেকেই কোন রকমের বাফারিং ছাড়াই দেখতে পারবেন।
5G ব্যান্ডইউথ সমস্যার সমাধান করতে পারবে। এই সময়ে একাধিক এমন ডিভাইস আছে যা 4G আর 3G কানেকশানের সঙ্গে আছে আর সেখানে এই দুইএর সামঞ্জস্য রাখা অনেক সময়েই মুস্কিল হয়। আর সেখানে 5G ডিভাইসের বর্তমান এমারজিং প্রযুক্তির সঙ্গে ড্রাইভারলেস গাড়ি বা কানেক্টেড হোম প্রোডেক্টারের সঙ্গেও কাজ করতে পারবে।
মানে সোজা কথায় এই বলা যায় যে 5G আমাদের যোগাযোগ আর অনেক কাজ অনেক দ্রুত করে দেবে। তবে হ্যাঁ এর সঙ্গে এও ঠিক যে এর মধ্যে 5G কানেকশান টেস্টের সময়ে কিছু ঘটনা বা এই প্রযুক্তি আমাদের প্রাকৃতিক ভারসাম্য নষ্ট করে দিতে পারের মতন একাধিক প্রশ্ন উঠেছে। আর সঙ্গে অবশ্যই 5G কানেক্টিভিটির ভালর সঙ্গে একাধিক মন্দ বিষয়েও আলোচনা হয়েছে অনেক জায়গায়।
সেই সব কিছু মাথায় রেখে আর মানুষের বিবর্তনের ইতিহাস মাথায় রেখে এটুকু বলা যায় যে 5G আমাদের মানব সভ্যতার প্রযুক্তির প্রথম স্ফুলিঙ্গের মতন আমাদের সামনে একাধিক ভাল মন্দের প্রশ্ন রাখবে বা রাখছে। তবে এর সঙ্গে এও ঠিক মানব সভ্যতার ইতিহাস আমদাএর এগিয়ে যাওয়ার পথই দেখায়।
5G সম্পূর্ণ ভাবে এসে গেলে কি হবে আর আমাদের দেশে 5G কবে আসবের মতন প্রশ্ন আমাদের কাছে এখনও প্রশ্ন হিসাবেই আছে। কিন্তু এও ঠিক যে আমরা সবাই 5G আসার জন্য অপেক্ষা করছি। ঠিক যেমন এক সময়ে 4G র জন্য নানা আশা আশঙ্কায় আমাদের দিক কেটেছে অনেকটা তেমনই।
এখানে মূলত 4G আর 5G র মধ্যেকার পার্থক্যই আমরা দেখারনোর চেষ্টা করেছি। এর সঙ্গে এই বিষয়ে আরও একাধিক জিনিস সময় সুযোগ মতন আমরা নিশ্চয়ই আপনাদের জানাব। আপাতত আমরাও 5G র আসার অপেক্ষায় আর 5G এলে কি হয় তা বাস্তব ব্যাবহারের পরেই আপনাদের সামনে নিয়ে আসতে পারব। মূলত 4G আর 5G র কানেকশানের এই পার্থক্য এই।